অনেক দিনের কাযা রোজা যেভাবে রাখবেন।
আমাদের অনেকেরই রমাদান মাসে প্রতি বছর অনেক রোজা বাদ যায় প্রাকৃতিক কারণে এবং গর্ভাবস্থায় ও সন্তান জন্মের পরবর্তী অবস্থায় যা রমাদানের পরে কাযা করা ফরয।
অনেকে তো ইচ্ছাকৃত ভাবেও অনেক রোজা বাদ দিয়েছেন জীবনে হয়তো তখন দ্বীনের বুঝ ছিল না এজন্য।
আমরা অনেকেই এই ব্যাপারে অলসতা করি এবং এক সময় শয়তান আমাদের কাযা রোজার কথা সম্পূর্ণ ভুলিয়ে দেয় এবং আবার বছর ঘুরে রমাদান চলে আসে।
এভাবে প্রতি বছরই ঝুলিতে কাযার পরিমাণ বাড়তেই থাকে এবং আফসোস বাড়ে “কেন রোজাগুলো রাখলাম না” এই হতাশায়।
আমাদের উপর যেদিন থেকে রোযা ফরজ হয়েছে এবং প্রতি বছর শরীয়তের নিষেধ সহ ও অসুস্থতার কারনে কয়টা রোজা ভেঙেছি হিসাব করে সেই রোজাগুলো অবশ্যই অবশ্যই আদায় করতে হবে।
কারণ ফরজ রোজা কাযা হলে তা পরবর্তীতে আদায় করে নেয়াও ফরজ।
(আর রোজা রেখেও ইচ্ছাকৃত ভেঙ্গে ফেলে থাকলে তার কাফফারা ও দিতে হবে। সেক্ষেত্রে সে ব্যাপারে হুকুম জেনে নিবেন বিস্তারিত)
এখন দিন ছোট হয়ে গেছে! রোজা রাখায় কষ্ট কম হবে!
আমরা যদি রোজার কাযা আদায় না করি তাহলে আল্লাহ তা’য়ালা ফরয রোজার জন্যে আমাদের কে পাকড়াও করবেন।
আছে কী কোনো জবাব আল্লাহ তা’য়ালাকে দেওয়ার মত?
নফল রোজা রাখার চেয়ে ফরজ রোজার কাযা আদায় অধিক গুরুত্বপূর্ণ।নফল রোজা হলো অতিরিক্ত রোজা যা রাখলে সওয়াব,না রাখলে গোনাহ নেই।আর ফরজ রোজার কাযা আদায় বান্দার উপর ফরয।ফরজ অর্থ আল্লাহ পাকের এমন হুকুম যা অবশ্যই পালনীয়,যা পালন না করলে কবীরা গুনাহ হবে।
আমাদের মেয়েদের অনেকের তো একেবারে ছোটবেলা থেকেই (পিরিয়ড এর কারণে) ছুটে যাওয়া রোজা কাযা আছে যা হিসেব করে দেখলে আমরাই ভয় পেয়ে যাব!
রমাদানে ছুটে যাওয়া এই রোজার কাযা যত দ্রুত সম্ভব আদায় করতেই হবে,এখানে দ্বিতীয় কোন অপশন নেই।
একটা মজার বুদ্ধি দিই,দেখবেন আনন্দে আনন্দে আপনার কাজা রোজা আদায় হয়ে গেছে।
জীবনের কাযা রোযা গুলোর হিসাব করার পর একটা ডায়েরী অথবা খাতায় সেই সংখ্যা গুলো এক এক করে লিখবেন।
ধরুন,হিসাব করে হলো ৫৫ টা!এখন ১,২,৩,৪,,,,,,,,৫৫ এভাবে লিখবেন।(বোঝার জন্য একটা ছবি যোগ করে দিয়েছি)
তারপর কাযা আদায়ের উদ্দেশ্যে যেদিন প্রথম রোজা রাখবেন ঐ লিখে রাখা সংখ্যার ৫৫ এর উপরে ক্রস দিবেন,বাকি থাকলো ৫৪ টা।
২য় রোজা আদায়ের পর ক্রস দিবেন ৫৪ এর উপর।
৩য় দিন আদায়ের ক্রস দিবেন ৫৩ এর উপর।
এভাবে চলতে থাকবে! ১ টা করে কাযা রোজা আদায় করবেন আর আপনার হিসাবের খাতা থেকে সেটা বাদ যাবে!কয়টা বাকি থাকলো সেটাও সহজে পাওয়া যাবে।
মজার না ব্যাপারটা?
মন তখন ছটফট করবে,আল্লাহ-আপনার সন্তুষ্টির জন্য আমি আবার কবে রোজা রাখবো আর আমার হিসাবের খাতা থেকে একটা বোঝা কমাবো!
ট্রাই করে দেখতে পারেন।আমি নিজের ক্ষেত্রে এপ্লাই করে খুব ভালো ফলাফল পেয়েছি,আগ্রহ এত যে বেড়েছে,,,,, আলহামদুলিল্লাহ্।তাই বোনগুলোর কাছেও শেয়ার করলাম।
আমার কথায় যদি কোনো বোন রোজার কাযা আদায় করে থাকেন তবে সমপরিমাণ সওয়াব আমিও পাবো, ইং শা আল্লাহ্।
(আল্লাহ রিয়ার গুনাহ থেকে আমাকে মুক্ত রাখুন, হেফাজত করুন)
আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা আমাদের সবাইকে জীবনের কাযা রোজা গুলো আদায় সামর্থ্য দান করুক,ঐ মহান রবের হক আদায় করার তৌফিক দান করুক।
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, শীতকাল মুমিনের জন্য বসন্ত কাল। শীতের রাত দীর্ঘ হওয়ায় মুমিন রাত্রিকালীন নফল নামাজ আদায় করতে পারে এবং দিন ছোট হওয়ায় রোজা রাখতে পারে।
(আহমাদ:১১৬৫৬, বায়হাক্বী:৩৯৪০)
#শামছুন্নাহার_রুমি
(কিঞ্চিৎ পরিবর্তিত)
( সংগৃহীত )
_____________________________________
ভাই ও বোন যাদের রমজানের রোযা কাযা ( ভাঙতি ) আছে তারা অবশ্যই এই রোযা গুলো দ্রুত রেখে দিবেন। আমরা অনেকেই অনেক নফল রোযা রেখে থাকি। আপাতত নফল রোযা রাখা বন্ধ করে দিন । আগে কাযা আদায় করুন। অথবা কাযার পাশাপাশি বিশেষ বিশেষ নফল রোযাগুলোও রাখুন।
ইবাদাত তো করলে কোন ক্ষতি নেই। আর আমরা তো দুনিয়াতে এসেছি ইবাদাত করার জন্যই । আমাদের চির সুখের নিবাস হলো জান্নাত। এই ক্ষণস্থায়ি জীবনে একটু যদি বেশি ইবাদাত করতে নাই পারলাম তাহলে আর কি করলাম আমরা?
তাছাড়া রোযা এমন ইবাদাত যে এর জন্য বাড়তি সময় নষ্ট হয় না। রাতের রান্নার সাথে সাহরির রান্না করে রাখা। ফজরের আগে সাহরি খাওয়া আর মাগরিবের পর ইফতারি ।
সকলের খাবার দুপুরের খাবার মাঝে মধ্যে হালকা খাওয়ার কোন ঝামেলা থাকে না।
আবার এমন অনেক ভাই বোন আছেন যে সকালে হালকা কিছু খাই আর কাজ করতে করতে সেই বিকালে খাবার খাই । একটু হিম্মত করে সাহরি খেয়ে নিয়ত করলেই রোযা টা হয়ে যেত। এমনিতে না খেয়ে থেকে ততো কোন সোওয়াব নেই। নিয়ত করতে হবে।
ছেলে মেয়েদের বালেগ হওয়ার পর থেকে রোযা ফরয।
#ছেলে_মেয়ে_বালেগ_বা_প্রাপ্তবয়স্ক_কখন_হয়
⭕জিজ্ঞাসা–২০১: ছেলেরা পরিপূর্ন রূপে বালেগ কখন হয়?–মোঃ মুবিন : mubin666sos@gmail.com
?জবাব: ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের বালেগ হওয়ার বয়সসীমা ও আলামত শরীয়তের পক্ষ থেকে নির্ধারিত রয়েছে। কোনো ছেলে বা মেয়ের মধ্যে বালেগ হওয়ার নির্দিষ্ট আলামত পাওয়া গেলে বা নির্দিষ্ট বয়সসীমায় পৌঁছলেই তাকে বালেগ গণ্য করা হবে এবং তখন থেকেই শরীয়তের হুকুম-আহকাম তার উপর প্রযোজ্য হবে।
?ছেলেদের বালেগ হওয়ার আলামত হল:
?ক) স্বপ্নদোষ হওয়া।
?খ) বীর্যপাত হওয়া।
?আর মেয়েদের বালেগ হওয়ার আলামত হল:
?ক) স্বপ্নদোষ হওয়া।
?খ) হায়েয (ঋতুস্রাব) আসা।
?গ) গর্ভধারণ করা।
বালেগ হওয়ার উপরোক্ত নির্দিষ্ট আলামত যদি কোনো ছেলে বা মেয়ের মধ্যে পাওয়া না যায় সেক্ষেত্রে উভয়ের বয়স যখন হিজরী বর্ষ হিসাবে পনেরো বছর পূর্ণ হবে তখন প্রত্যেককে বালেগ গণ্য করা হবে এবং পনেরো বছর পূর্ণ হওয়ার পর কোনো আলামত পাওয়া না গেলেও সে বালেগ বলেই বিবেচিত হবে। (আল ইনায়া শারহুল হেদায়া ৮/২০১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/১৫৩; তাফসীরে কুরতুবী ১২/১৫১)
والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী
_______________________________________
হিজরী বর্ষ 354 দিন বা 355 দিন হয়ে থাকে ।
সতর্কতার জন্য 354 দিন ধরে নেওয়া ভালো।
354 দিন × 15 বছর = 5310 দিন ( হিজরী / আরবী )
( 5310 ÷ 365 = 14 বছর 54 দিন ( ইংরেজি হিসাব )
অর্থাৎ 14 বছর 1 মাস 23 দিন ( ইংরেজি হিসাব )
এটা বিগত বছরের ক্যালেণ্ডার হিসাবে করা হলো ।
মুসলমানদের জন্য উত্তম হলো হিজরী দিন মাস বছর গণনা করা।
আর সব কিছুর হিসাব রাখা ।
যেমন যাকাত ফরয হয় হিজরী বর্ষ হিসাবে । 354/355 দিনে । কেউ যদি ইংরেজির হিসাবে যাকাত দেয় তাহলে একটা নির্দিষ্ট সময়ের যাকাত অনাদায় থেকে যাবে ।।
আমাদের উচিত বছর শুরু থেকে একটা ভালো মানের ক্যালেণ্ডার কিনে ঘরে রাখা । আর পাশাপাশি খবর রাখা কখন চাঁদ উঠছে আর কখন শেষ হচ্ছে ।
কারণ আরবি বা হিজরী তারিখ গুলো চাঁদের উপর নির্ভর করে । এজন্য ক্যালেণ্ডার এর তারিখ মাঝে মধ্যে পরিবর্তন হতে পারে । পরিবর্তন হলে সেটা কলম দিয়ে মার্ক করে ঠিক করে নিতে হবে ।
# আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকেই হিজরি তারিখ গণনা অভ্যাস করার তাওফিক দান করুক ।
আমিন
? কাযা রোযা যে কোন দিন রাখা যায়। শুধু একদিনও রাখা যায়।
? সাহরি খাওয়া সুন্নাত ও বরকতের । যদি কেউ সাহরি খাওয়ার সময় না পান বা ঘুম থেকে উঠে দেখেন যে ফজর শুরু হয়ে গেছে তাহলে সাহরি নাখেয়েও রোযা রাখতে পারবেন। নিয়ত করে নিবেন অমুক দিনের কাযা রোযা রাখলাম।
? সাহরির শেষ সময় জেনে সাহরি খাবেন । আযান পর্যন্ত সাহরি খেলে রোযা হবে না ।
____
যাঝাকুমুল্লাহু_খইরন ।।