শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শারীরিকভাবে হয়তো বঙ্গবন্ধুর প্রস্থান হয়েছে, কিন্তু তার আদর্শকে সরিয়ে দেওয়া যায়নি। আদর্শকে ধারণ করে আবার তিনি আমাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছেন। যারা তার নামকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল, তারাই আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।
রোববার (২১ আগস্ট) বিকেলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর ঢাকা থেকে অনেক দূরে অজপাড়াগাঁ টুঙ্গিপাড়ায় দাফন করা হয়েছিল যাতে তাকে কেউ মনে না রাখতে পারে, যাতে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যায়। বাঙালির মানস থেকে একেবারে দূর করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তাকে আবার বাঙালি তাদের হৃদয়ে ধারণ করেছে। সেসময়কার অজপাড়াগাঁ টুঙ্গিপাড়ায় এখন মানুষের ঢল নামে।
তিনি বলেন, যারা বাংলাদেশ নয় পাকিস্তান চেয়েছিল, তাদের জন্য সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কারণ তিনি সাড়ে সাত কোটি বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন, যেটি আর কেউ পারেনি। এ কারণে তাকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের গুণাবলী শেখ হাসিনার মাঝেও রয়েছে। তিনি কখনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। তার প্রতিটি সিদ্ধান্তের পেছনে দেশপ্রেম রয়েছে। জনপ্রিয়তার স্বার্থে অনুচিত কিছুকে প্রশ্রয় দেননি।
অনলাইনে যুক্ত হয়ে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপ-মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, সাম্প্রদায়িকতা যাতে না ছড়ায় সেজন্য আমরা বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গড়ে তুলতে চাচ্ছি। কিন্তু সাম্প্রদায়িক চর্চার লালন যদি বিজ্ঞান পড়ায়ও হয়, তা নিয়ে কী আর বলব! এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। তা না হলে এই প্রজন্মের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার চর্চা হতে থাকবে।
সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বের কাছে পরাজিত হয়ে পাকিস্তান অন্ধকারের পথ বেছে নিয়েছিল। তাতে হাত মেলাল এদেশি কিছু মানুষ। তাদের মানুষ নয়, পিশাচ বলাই শ্রেয়। তারা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করল। কিন্তু তারা জানত না ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্ব বারবার ফিরে আসে। বঙ্গবন্ধুর শারীরিক প্রস্থান হলেও তার আদর্শ এখনো প্রাসঙ্গিক। এর মাধ্যমে বলা যায়, তিনি আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে ফিরে এসেছেন।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. হাকিম আরিফের সভাপতিত্বে সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইনস্টিটিউটের পরিচালক (ভাষা, গবেষণা ও পরিকল্পনা) আজহারুল আমিন।