যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে’ অর্থাৎ একজন নারী তার পরিবারকে যতটা যত্ন দিয়ে আগলে রাখে ঠিক তেমনভাবেই সে তার কাজের দিকেও সমান গুরুত্ব দেয়। এককথায়, একজন নারীই পারে তার পরিবার এবং কাজের মধ্যে সামঞ্জস্যতা বজায় রাখতে।
একজন নারী তার জীবনের বিভিন্ন ধাপে বিভিন্ন রকম ভূমিকা পালন করে। কখনও সে কন্যা, কখনও বোন, কখনও স্ত্রী, কখনও মা। তাই জীবনের সর্বক্ষেত্রেই নারীর অভিজ্ঞতা থাকে। কিন্তু আপনি নিশ্চয়ই অনেক ব্যক্তিকেই বলতে শুনেছেন যে, ‘নারীর মন বোঝা খুব কঠিন’।
আসলে নারীদের ব্যক্তিত্বে স্নেহ, ভালবাসা, সংকল্প, উদ্যমশীলতা এবং শক্তির নিখুঁত সংমিশ্রণ থাকে। সম্ভবত, এই কারণেই নারীদের ব্যক্তিত্বকে ধরা কঠিন হতে পারে। একজন নারী তার জীবনটা ঠিক কীভাবে কাটাতে চান সেটা সে ঠিক করেই রাখে। কিন্তু, কিছু কিছু নারীর ক্ষেত্রে তার ইচ্ছাগুলো পূরণ হয়, আবার কিছু কিছু নারীর ক্ষেত্রে তার ইচ্ছাগুলি অধরাই থেকে যায়। দেখে নিন সেগুলো-
স্বপ্নপূরণের জন্য সমর্থন
পুরুষদের মতো নারীরাও স্বপ্ন দেখে। আর তাদের স্বপ্নগুলি পূরণ করার জন্যও মানসিক সহায়তার প্রয়োজন। একজন নারী যে স্বপ্নই দেখুক না কেন, সে সবসময় চায় স্বপ্নপূরণের ক্ষেত্রে যেন তার প্রিয়জনের সমর্থন ও উৎসাহ থাকে। কারণ প্রিয়জন পাশে থাকলে যেকোনো কঠিন পরিস্থিতির সাথেই মোকাবিলা করা সহজ হয়।
সুখী জীবনযাপনের স্বাধীনতা
নারীদেরও সুখে বাঁচার অধিকার আছে। একটা সময় ছিল যখন প্রত্যেক মেয়েই বাড়ির চার দেয়ালের সীমাবদ্ধ ছিল। যদিও সময়টি পরিবর্তিত হয়েছে, কিন্তু এখনও অনেকসময় নারীদের জীবনযাপনে বিধিনিষেধ থাকতে দেখা যায়। কোনো নারী যখন তার পছন্দ অনুযায়ী জীবনযাপন করার চেষ্টা করে তখন সমাজের কাছ থেকে কিছু না কিছুতে সে বাধাগ্রস্ত হয়। কিন্তু পৃথিবীর প্রতিটি নারীই যাতে তার পছন্দমতো জীবন-যাপন করতে পারে সেদিকে আমাদেরই খেয়াল রাখা দরকার।
সামাজিক চাপ
একজন নারী যখন একটি নির্দিষ্ট বয়সে পৌঁছায়, তখন তার পরিবার এবং সমাজ বিয়ে করার কথা বলে। সমাজ সেই নারীকে বোঝানোর চেষ্টা করে যে, একমাত্র বিয়ে করার মাধ্যমেই সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়। কিন্তু আমরা কেন কোনো মেয়েকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেওয়ার চেয়ে তাকে তার ক্যারিয়ারের জন্য উৎসাহিত করি না এবং তার ক্ষমতায়নের কথা ভাবতে পারি না?
ঋতুচক্র
ঋতুস্রাব নারীদের শরীরের একটি অতি সাধারণ বিষয়, যা প্রতি মাসে প্রতিটি নারীরই হয়ে থাকে। ঋতুস্রাব চলাকালীন মেয়েরা ব্যথা ও অস্বস্তিতে ভুগতে থাকেন। এছাড়াও ঋতুস্রাব চলাকালীন আরেকটি যে অস্বস্তি হয় তা হলো, দাগ লাগার ভয়। কারণ, এই নিয়ে অনেক মেয়েই সমাজে হাসির খোরাক হয়ে থাকে। তাই, প্রতিটি নারীই চায় ব্যথাহীন এবং দাগমুক্ত ঋতুস্রাব।
সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
সমাজ নারীদের জন্য বিভিন্ন নিয়ম নির্ধারণ করেছে। যারা এই সামাজিক নিয়মগুলো পূরণ করতে অক্ষম তাদের নীচু চোখে দেখা হয়, যেমন- গভীর রাতে বাইরে থাকা, ছোট জামা-কাপড় পরা, অতিরিক্ত আড্ডা দেওয়া। একইভাবে কোনো নারী যদি একা ভ্রমণকারী হন তবে তিনিও সমাজের প্রশ্নের মুখে পড়েন। সমাজ কোনো নারী জীবনযাপনকে গ্রহণ করার পরিবর্তে, তাকে নিকৃষ্ট ও খারাপ বোধ করাতে কখনোই ব্যর্থ হয় না।
নিরাপদ পরিবেশে বড় হওয়া
একজন নারীর পক্ষে শুধুমাত্র রাতে নয়, দিনেও রাস্তা দিয়ে একা চলা ভীতিজনক এবং কঠিন হয়ে উঠেছে। শুধু এটিই নয়, মেয়েরা নিজের বাড়িতেও অনিরাপদ। যারা নারীদের বিরুদ্ধে জঘন্য অপরাধ করে তাদের ভাবা উচিত যে, নারীরাও মানুষ এবং তারাও চায় অপহরণ, হয়রানির শিকার ও শ্লীলতাহানির ভয় ছাড়াই জীবনযাপন করতে।
চুল পড়া
চুল পড়ার সমস্যা প্রত্যেক নারীকেই চিন্তিত করে তোলে। একজন নারীর সৌন্দর্যের ক্ষেত্রে মাথার চুলের ভূমিকা অপরিসীম, তাই যাদের চুল পড়ার সমস্যা আছে তারা প্রত্যেকই চিন্তিত। তারা সবসময় কোমল, উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর চুলের স্বপ্ন দেখে। এই জন্য, প্রত্যেক নারীই চুলের অতিরিক্ত যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করে।
ফ্যাট ছাড়াই সুস্বাদু খাবার খাওয়া
অনেক মেয়েরই স্বপ্ন থাকে, শরীরে মেদ ছাড়াই সুস্বাদু খাবার খাওয়া। মোটা হওয়া সাধারণত মেয়েদের জন্য দুঃস্বপ্ন। তাই নিজেকে ফিট এবং সুন্দর রাখতে অনেক মেয়েই তাদের প্রিয় খাবারগুলি খাওয়া বন্ধ করে দেয়। কিন্তু তারা পছন্দসই খাবার খেতে এবং নিজের মতোই থাকতে পছন্দ করে।
সুন্দর ত্বক
বিশ্বজুড়ে নারীরা নরম, কোমল, দাগহীন, উজ্জ্বল ত্বকের স্বপ্ন দেখে। পিম্পলস, দাগ আর ব্রণ প্রত্যেক মেয়ের কাছেই ভয়ংকর স্বপ্নের চেয়ে কম নয়।
সঙ্গীর সাথে ঘনিষ্ঠতা
কম-বেশি প্রত্যেক মেয়েই চায় তাদের সঙ্গীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে। এটি অনেক সময় সম্পর্ককে আরও মজবুত করে তুলতে পারে। এটি পুরুষ এবং নারী উভয়ের জন্যই সমান আনন্দদায়ক। আপনি যদি ভাবেন যে, নারীদের যৌন আকাঙ্ক্ষা এবং কল্পনা থাকে না তবে আপনি ভুল হতে পারেন। নারীরা সর্বদাই উত্তেজনাপূর্ণ যৌনজীবন চান যা কেবল তাদের সন্তুষ্টই করে না, তাদের মধ্যে ভালোবাসার অনুভূতিও তৈরি করে।