লোভ-লালসা, খ্যাতি,সেক্সুয়াল ব্ল্যাকমেইল কিংবা রাজনীতির ক্ষমতা ইত্যাদি নিয়ে টান টান উত্তেজনা নিয়ে নির্মিত হয়েছে ওয়েবসিরিজ মরীচিকা।
সিরিজটির গল্প যদি খেয়াল করি তাহলে এক মডেলকে খুন করে নদীতে ফেলে দেয়া হয়। সেখান থেকে লাশটি আটকে যায় একটি নৌকার সাথে।
এরপর লাশটিকে কেন্দ্র করেই শুরু হয় মূলত কাহিনী। শুরু হয় তদন্ত, আসতে আসতে বের হতে থাকে এক একটি কালো অধ্যায়।
এই গল্পটা অনেকটা মডেল তিন্নি হত্যার ঘটনার সাথে মিল আছে। যদি মিলের দিকটি তুলে ধরি এখানে ক্রাইম জিনিসটি ফুটে উঠবে,যা এখনকার ওয়েব সিরিজ বলতে যা বুঝানো হয়ে থাকে আর কি!
সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং প্লট যেটা মনে হলো, এখানে মিডিয়া জগতের কালো অধ্যায়। বিশেষ করে এখনকার বাংলাদেশী তারকাদের যেসব নেগেটিভ পয়েন্ট সবার সামনে ফুটে উঠেছে এখানে।
পরিচালক শিহাব শাহীন এখানে তাই দেখাতে চেয়েছেন। আর সবচাইতে আর্কষনীয় যে জিনিসটি ছিলো সিনেমাতে বাইরের মানুষের প্রবেশ, অর্থাৎ নোংরা রাজনীতির অবৈধভাবে হস্তক্ষেপ।যা এই মিডিয়া জগতের কালো অধ্যায়গুলো সবসময় পিছনে থেকে যায়।
এখন লক্ষ্য করা যাক, চরিত্র গুলোর দিকে। যদি চরিত্র বিন্যাস আর গল্পটা দেখি পরিচালক চাইলে সেটি ওয়েবসিরিজ না বানিয়ে ফিল্ম আকারে তৈরি করতে পারতো আর সেটির সিক্যুয়েল ফিল্ম বানাতে পারতো ।
কারণ গল্পটির বিল্ডিংটা হচ্ছে অনেকটা অপরাধ জগতের শুরুর অধ্যায় নিয়ে , কারণ এটির এখনো সমাপ্ত দেখানো হয়নি শেষে। অনেকটা উত্থান পতন এই ধাঁচের।
যদি এখানে পুলিশি চরিত্রের কথাটা ধরি তাহলে সিয়ামের চরিত্র তার ইমপেক্ট দেওয়ার চেষ্টা করেছে। অপরাধ রুখার টেনশন, ফ্যামিলি নিয়ে চিন্তা, তার কাজে বাধা দেওয়া নিয়ে রাগ এবং অ্যাকশন দৃশ্যে তার মুভমেন্ট ভালোই ছিলো।
এরপর মাহিয়া মাহিও তার জায়গা থেকে ভালো করেছে।তারপরও মাহির শেষ বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এটিই ছিলো তার ভালো প্রজেক্ট। একজন বিপদগ্রস্ত মেয়ের চরিত্রে কীভাবে খাপ খাওয়াতে হয় তা সে ভালো করে মানিয়ে নিয়েছে।
এইবার আশা যাক, আমাদের সবার প্রিয় বাবু ভাইয়ের কাছে। বাবু ভাই মানে আফরান নিশোর কথা বলা হচ্ছে। যখনই আসছে স্ক্রিনে সবার ভিতরে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। তার হাতে সিগারেট নিয়ে কথা বলা আর চলার ভঙ্গি দেখে কি কেউ বলবে তিনি কমেডি ও সাধারণ ভাবভঙ্গিতে নাটক করতেন। তিনিই প্রথম মনে হয় যেখানে তাকে একজন স্টাইলিষ্ট খলনায়ক চরিত্রে দেখা গিয়েছে। তার মধ্যে অনেকটা হুমায়ূন ফরীদির চাপ দেখা গেছে। অবশ্য তার প্রিয় অভিনেতা হলেন হুমায়ূন ফরিদী।
হুমায়ূন ফরীদির সময় তার খলনায়কের চরিত্র মানুষকে ভয়ে ভুগাতো। এইবারও নিশোর চরিত্রটি ঠিক সেইরকম । তার চরিত্রটি এমন তাকে ঘৃণাও করবে আবার তার স্টাইলকে ফলোও করবে এই অবস্থা। তার একটি অসাধারণ সংলাপ ও রয়েছে: “দানবের বিনাশ নায়”।
এছাড়া বাদবাকি যারা পার্শ্বচরিত্রে ছিলো তারা তাদের ছোট রোল অনুযায়ী ভালো অভিনয় করেছে।
এইবার আসি অ্যাকশন দৃশ্য শ্যুটিং এর কথা, বিশেষ করে গোলাগুলির সিন। এই সিরিজে খেলনা পিস্তল ও গ্রাফিক্স গুলির ব্যবহার যা রীতিমতো হাসাবে ও মনে প্রশ্ন জাগাবে।
সর্বোপরি দর্শকের জন্য ভিন্ন কিছুই আছে এই ওয়েব সিরিজে।
রিভিউ:- সুমন বৈদ্য