প্রতিদিনিই বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। শিশু, বয়স্ক, তরুণ অনেকেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। তবে আগে থেকেই সতর্ক হলে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা পেতে পারেন সহজেই। জ্বর হলে অবহেলা না করে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। মশার কামড় থেকে বাঁচতে সব রকমের সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
মশাবাহিত রোগ হলেও ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা পেতে শরীরে চাই শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এজন্য খাওয়া-দাওয়ার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।
জেনে নিন, ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা পেতে কোন কোন খাবার বেশি করে খাবেন-
ভিটামিন সি যুক্ত খাবার
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে ভিটামিস সি-এর জুড়ি মেলা ভার। টকজাতীয় বিভিন্ন ফলে ভরপুর পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন সি। কমলালেবু, পাতিলেবু, বাতাবি, স্ট্রবেরি, কিউই, বেল পেপার ভিটামিন সি-এর দুর্দান্ত উৎস। এই শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করে কমাতে এবং বিভিন্ন রোগের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা জোগায়।
জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার
ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করতে জিঙ্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লিন মিট, মুরগির মাংস, বাদাম এবং বীজের মতো খাবারে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক থাকে। এই খনিজটি ইমিউন কোষ এবং অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সহায়তা করে। যা আমাদের শরীরে মশা-বাহিত প্যাথোজেন প্রতিরোধ করার ক্ষমতা জোগায়।
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড
স্যালমন, ম্যাকেরেল, সার্ডিনের মতো ফ্যাটি ফিশ ওমেগা থ্রি-এর দুর্দান্ত উৎস। এছাড়া, ফ্ল্যাক্সসিড এবং আখরোটেও প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এই ফ্যাটি অ্যাসিডের মধ্যে রয়েছে প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য। প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় ওমেগা থ্রি রাখলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও শক্তিশালী হয়।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার
বেরি জাতীয় ফল, আঙুর, পালং শাক, কালে, ব্রকোলিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে কোষকে রক্ষা করে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মশাবাহিত সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা যোগায়।
রসুন এবং হলুদ
রসুন এবং হলুদ, উভয়ই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খুবই কার্যকরী। রসুনের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য। অন্যদিকে, হলুদে রয়েছে কারকিউমিন নামক যৌগ, যার মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ রয়েছে। প্রতিদিনের ডায়েটে এই মশলাগুলি রাখলে মশা-বাহিত রোগ থেকে অনেকটাই সুরক্ষিত থাকা যেতে পারে।
প্রচুর পানি পান করুন
সুস্বাস্থ্যের জন্য পানি পানের গুরুত্ব কতটা, তা আমরা সবাই জানি। ইমিউনিটি শক্তিশালী করতে হলে হাইড্রেটেড থাকা অপরিহার্য। তবে শুধু পানি পান করলেই হবে না, পাশাপাশি কলা, ফল, ডাব, ফলের রস এবং দইয়ের মতো খাবারও খেতে হবে।
ভিটামিন ডি
ইমিউনিটি শক্তিশালী করতে ভিটামিন ডি-ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সূর্যের আলো ভিটামিন ডি এর সবচেয়ে ভাল উৎস। এ ছাড়াও, শরীরে ভিটামিন ডি এর চাহিদা পূরণ করতে ফ্যাটি ফিশ, ফোর্টিফায়েড দুগ্ধজাত খাদ্য এবং ডিমের কুসুম রোজের ডায়েটে রাখতে পারেন।
এই আর্টিকেলটি সচেতনতার জন্য লেখা। কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।